ধর্মকে জীবিকা করা প্রসঙ্গে

অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন বিনিময় মূল্য /পারিশ্রমিক কামনা করে না, অত:পর তারাই সুপথ প্রাপ্ত।

সুরা ইয়াসীন, ৩৬:২১

বস্তুত, যারা আল্লাহ কেতাবে যা অবতীর্ণ করেছেন তা গোপন করে এবং এর বিনিময়ে পার্থিব তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তারা তাদের পেটে আগুন ছাড়া আর কিছুই ঢুকায় না। এবং আল্লাহ হাশরের দিন তাদের সঙ্গে কথাও বলবেন না, তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব। এরাই হচ্ছে সেই সমস্ত মানুষ যারা সঠিক পথের (হেদায়াহ) পরিবর্তে পথভ্রষ্টতা (দালালাহ) এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করে নিয়েছে। আগুন সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল।

সুরা বাকারা, ২:১৭৪

অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে কিছু লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে – যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে।

সুরা বাকারা, ২:৭৯

হে ঈমানদারগণ! নিশ্চই ধর্মের মোল্লা ও পুরোহিতশ্রেনীর অনেকে সাধারন মানুষের মালামাল অন্যায়ভাবে ভোগ করে চলছে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের নিবৃত রাখছে। আর যারা স্বর্ণ ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে, তাদের কঠোর আযাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।

সুরা তওবা, ৯:৩৪

আপনি কি তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চান? আপনার পালনকর্তার প্রতিদান উত্তম এবং তিনিই রিযিকদাতা। আপনি তো তাদেরকে সোজা পথে দাওয়াত দিচ্ছেন;

সুরা মু’মিনুন ২৩:৭২,৭৩

বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না বরং তা তোমরাই রাখ। আমার পুরস্কার তো আল্লাহর কাছে রয়েছে। প্রত্যেক বস্তুই তাঁর সামনে।

সুরা সাবা, ৩৪:৪৭

আর তোমরা সে গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, যা আমি অবতীর্ণ করেছি সত্যবাণী হিসেবে তোমাদের কাছে। বস্তুতঃ তোমরা তার প্রাথমিক অস্বীকারকারী হয়ো না আর সামান্য মূল্যে আমার আয়াতের কেনাবেচা করো না। এবং আমার (আযাব) থেকে বাঁচ।

সুরা বাকারা, ২:৪১

সত্য কাজের কোন পারিশ্রমিক হয় না, সত্য কাজে পারিশ্রমিক চাওয়া যায় না। এটাই সার্বজনীন সত্য এবং এটাই কুরআনের শিক্ষা। ধর্মকে পেশা বা জীবিকা করা কুরআনের শিক্ষা ও নির্দেশনা অনুসারে অন্যায়, যারা তা করে তাদের অনুসরণ করা অনুচিত। কাদের অনুসরণ করা উচিত, এই প্রশ্নের উত্তরে কোরআন যে মানদন্ড দেয় তা হলো, যারা কোন বিনিময় চায় না, যারা এ কাজকে জীবিকা করে না, যারা এটাকে পেশায় পরিণত করে না।

বর্তমানে ধর্মের ব্যবসায়ীরা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে তাদেরই অনুসরণ করছে যারা টাকা ছাড়া মিলাদ, ফাতেহা, ওয়াজ, নসিহত, মৃতের জন্য জানাযা দোয়া সহ ধর্মীয় কোন কাজ করছে না। মুসলিমকে এই আগুনখোর ধর্মজীবিরাই কুরআন থেকে দূরে সরিয়ে রেখে ধর্মান্ধ বানিয়ে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করছে। এদের প্রভাবে মুসলিমরা অসংখ্য ভাগে বিভক্ত হয়ে ভাতৃঘাতী লড়াই লড়ে নিজেরাই ধ্বংস হচ্ছে। এই আগুনখোর মোল্লা ও পুরোহিত শ্রেনীর উপর নির্ভর করে এরা স্রষ্টার নিদের্শনা থেকে বহু দূরে সরে যাচ্ছে।

যারা আল্লাহর আয়াতকে বিকিকিনির পণ্য বানায় তারা ধর্ম ব্যবসায়ী, যারা সত্য প্রচারের জন্য পারিশ্রমিক নেওয়ার উসিলা বানায় তারাই স্রষ্টার দৃষ্টিতে পথভ্রষ্ট। আল্লাহ এই শ্রেনীর অমানুষদের থেকে আমাদের হেফাজত করুন। এরা এদের কাজের মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর সঠিক পথ থেকে বিচু্্যত করে।


ইঞ্জিল, তৌরাত ও কুরআনে ধর্ম বিষয়ে পারিশ্রমিক গ্রহন প্রসঙ্গে শিক্ষার জন্য দেখুন


Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.